মোঃ বাবর আলী, কালিয়া প্রতিনিধিঃ
নড়াইলের কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধ চুরিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এ দাবিতে আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের সড়কে মানববন্ধন করেন তারা। ‘ভুক্তভোগী সাধারণ জনগণ’ ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্থানীয় বিএনপিপন্থী নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক স ম ওয়াহিদুজ্জামান মিলু, পৌর বিএনপির সভাপতি শেখ সেলিম হোসেন, সাবেক পৌর সদস্য সচিব শখ মনিরুজ্জামান মনা, ছাত্রদলের আহ্বায়ক স ম রাকিবুজ্জামান পাপু, স্থানীয় বাসিন্দা ইমরান হোসেন, রবিউল সর্দারসহ অনেকে।
বক্তারা অভিযোগ করেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত কয়েকজন কর্মচারী ওষুধ চুরি, স্বজনপ্রীতি ও নানা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তাঁদের মতে, দামি ওষুধ গোপনে বাইরে পাচার হয়ে যাচ্ছে, অথচ সাধারণ রোগীরা হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ওষুধ পাচ্ছেন না। বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, গতকাল এক আউটসোর্সিং কর্মী ওষুধ চুরি করতে গিয়ে এক সাংবাদিকের হাতে ধরা পড়েন। দীর্ঘদিন ধরে ওষুধের টেন্ডারও হয়নি, ফলে জনগণ ন্যায্য সেবা থেকে বঞ্চিত। বক্তাদের দাবি, সম্প্রতি প্রতিটি আউটসোর্সিং পদের জন্য অনিয়ম করে জনপ্রতি দুই লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে অযোগ্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইমরান হোসেন বলেন, “স্ত্রীর অস্ত্রোপচার করাতে গেলে হাসপাতালে কর্মচারীরা আমার কাছ থেকে অতিরিক্ত দুই হাজার টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে খারাপ ব্যবহার করে।” তিনি অভিযোগ করেন, সিজারিয়ান ডেলিভারির ক্ষেত্রে প্রায় সব রোগীর সঙ্গে এমনই করা হয়।
স ম ওয়াহিদুজ্জামান মিলু বলেন, “আমরা এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এখন প্রয়োজন নিরপেক্ষ তদন্ত ও দ্রুত ব্যবস্থা। আউটসোর্সিং পদের পুনর্মূল্যায়ন করে নতুন করে নিয়োগ দিতে হবে।”
এ বিষয়ে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শোয়াইব জানান, তিনি দায়িত্ব গ্রহণের আগে দীর্ঘ সময় এই পদ শূন্য ছিল। ফলে ওই সময় অফিসের আর্থিক কার্যক্রম ও ওষুধ সংক্রান্ত কাজকর্ম বন্ধ ছিল। তিনি বলেন, “আমার যোগদানের পর টেন্ডার মেয়াদোত্তীর্ণ পাওয়া যায়। বর্তমানে বিকল্প উপায়ে ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে এবং পর্যাপ্ত মজুত আছে।”
আউটসোর্সিং নিয়োগ বিষয়ে ডা. শোয়াইব জানান, “এই প্রক্রিয়া সিভিল সার্জনের দপ্তর থেকে পরিচালিত হয়। আমাদের এখান থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।”
ওষুধ চুরির ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। আপাতত আমাদের স্টাফদের জন্য ওষুধ বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে প্রয়োজন অনুসারে যাচাই করে ওষুধ দেওয়া হবে। অন্যান্য অভিযোগের বিষয়েও তদন্ত চলছে।”
আপনার মতামত লিখুন :